মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহরে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ
তবে টিভির লাইভ ফুটেজে বহু লোককে রাস্তার পাশে নিথর অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে তাজা রক্তের ফোয়ারা। প্রাথমিকভাবে ৩০ থেকে ৪০ জনের মারা যাওয়ার দাবি করেছে হেফাজত।
ঘড়ির কাটায় রাত ২টা ৩০ মিনিট। কেঁপে ওঠে ঢাকা শহর। শুধু গুলি আর গ্রেনেডের আওয়াজ। যৌথ বাহিনীর সাজোয়া যানের সাইরেনে সৃষ্টি হয় একটি একতরফা যুদ্ধের পরিস্থিতি। বিজিবি, র্যাব আর পুলিশের হাজার হাজার সদস্য ঝাপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র হেফাজত কর্মীদের ওপর। মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, ফকিরাপুল, ইত্তেফাক মোড়সহ আশপাশের এলাকা পরিনত হয় এক নারকীয় বধ্যভুমিতে। গুলি আর বোমার সামনে ঠিকতে না পেরে সরে যেতে বাধ্য হন সমাবেশস্থলে বসে থাকা নিরস্ত্র লাখো আলেম ওলামা। অনেকে হতাহত হয়ে রাস্তা পড়ে থাকেন। বাকিরা আশ্রয় নেন বিভিন্ন গলিতে।
যৌথ বাহিনী এরপর অভিযান চালায় গলিগুলোতে। সেখান থেকেও পিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।
র্যাব-বিজিবির যৌথ অভিযানে আহত শত শত হেফাজত কর্মীর নিথর দেহ মতিঝিল এলাকার বিভিন্ন সড়ক ও অলিগলিতে পড়ে আছে। অ্যাম্বুলেন্সের অভাবে তাদের হাসপাতালে নেয়া যাচ্ছে না।
এদিকে, অভিযানে কতজন হতাহত হয়েছেন তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। রাস্তায় পড়ে থাকা এসব হেফাজত কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে কতজন মারা গেছেন তা-ও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাস্তায় পড়ে থাকা এসব হেফাজত কর্মী-সমর্থকের অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ এবং মুমুর্ষু। আহত অনেকে সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করছে। অবশ্য আশাপাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসার মতো কেউ ছিল না।
এদিকে, ঢাকা মহানগর হেফাজতে ইসলামের প্রচার সেলের প্রধান মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াসেল অভিযানে অর্ধশতাধিক কর্মী-সমর্থক শাহাদত বরণ করেছেন বলে দাবি করেন। অনেক লাশ গুম করা হয়েছে বলেও অভিযাগ করেন তিনি।
অন্যদিকে, আশপাশের এলাকার হাসপাতালে দুপুর থেকেই আহতদের ভিড় রয়েছে। নতুন করে চিকিৎসা দিতে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের চিকিৎসক ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। আহতদের আর্তনাদে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।
শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ সরিয়ে দিয়েছে পুলিশ
তিনি জানান, হঠাৎ করে রাত ৩টার দিকে পুলিশ এসে গণজাগরণ মঞ্চটি সরিয়ে দেয়। তবে এ সময় কোনো সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।
এদিকে গণজাগরণ মঞ্চ সরিয়ে নেয়ার প্রতিবাদে শাহবাগে সোমবার সকালে অবস্থান নেয়ার পরিকল্পনা করছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি।
এর আগে রাত ২টার দিকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে অবস্থান নেয়া হেফাজতের নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিয়ে স্থাপিত মঞ্চ ভেঙে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হয়। তখন থেকেই একটানা এ মঞ্চ থেকে ব্লগারসহ স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল।
ঢাকা মেট্রপলিটন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
সিদ্ধিরগঞ্জ রণক্ষেত্র, নিহত ৭, ৩০ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ
শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতের কর্মীদের পুলিশ-র্যাব-বিজিবি উচ্ছেদ করলেও সোমবার সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের কর্মীদের সাথে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক চলছে।
সংঘর্ষে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন বিজিবি ও দুইজন পুলিশ সদস্য। নিহত অন্যদের পরিচয় জানা যায়নি। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
সংঘর্ষে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
সংঘর্ষ মাদারীনগর, পাইনাডি, মিজমিজি, কান্দাপাড়া, নিমাইকেশারিসহ আশপাশের এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।
বিজিবির গাড়িসহ অন্তত ৩০ গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে হেফাজতকর্মীরা। এছাড়া সিমরাইল পুলিশ ফাঁড়ি ও কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় আগুন দিয়েছে তারা। অন্যদিকে মাদাইনগর মাদরাসায় ছাত্রলীগ ও পুলিশ যৌথভাবে আক্রমণ করে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
সংঘর্ষে পুলিশসহ অর্ধশতাধিক হেফাজতকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে।
Four dead as Hefajat activists, police clash
At least four people were killed and several hundred injured as violent activists of Hefajat-e-Islam fought running battles with police across downtown Dhaka turning the capital into a city of panic on Sunday. One of the deceased was identified as... Full story
AL rejects Khaleda's ultimatum
The Awami League's general secretary Syed Ashraful Islam on Sunday outright rejected the 48-hour ultimatum the leader of the opposition in the parliament, Khaleda Zia, gave for the government to accept the demand for... Full story
Death toll reaches 626
The death toll from the Rana Plaza collapse reached 626 on Sunday night with the recovery of 53 bodies on the day and the rescue operation running to 12th day. The eight-storey Rana Plaza at Savar that housed five clothing factories, a shopping... Full story
BNP's 48-hr ultimatum ends today
The Bangladesh Nationalist Party-led '18-party' alliance will hold a rally in front of its central office at Naya Paltan today before its 48-hour 'ultimatum' to the government to accept the demand for an election-time... Full story
32 more unidentified victims buried
Anjuman-e-Mufidul Islam buried the bodies of 32 more unidentified victims of Rana Plaza disaster at Juraine Graveyard in the city on Sunday. The unidentified bodies were recovered from the debris of the collapsed... Full story
METRO
Nomination paper distribution begins
Distribution of nomination papers for the Barisal City Corporation elections scheduled to be held on June 15 started on Sunday. On the first day a total of 31 sets of nomination papers were collected by the aspirant candidates. Full story
BUSINESS
Apparel units will be closed if any more disaster takes place
The LGRD and cooperatives minister, Syed Ashraful Islam, on Sunday said that all apparel units would be closed if any incidents such as the Rana Plaza collapse or fire in Tazreen Fashions Ltd took place again. 'We may absorb the shock of the... Full story
INTERNATIONAL
Israel warplanes strike near Syria capital
Israeli strikes hit a military target outside Damascus on Sunday, the Jewish state's second reported raid on Syria this week, with residents saying the attack felt like an earthquake and turned the sky red. Full story
SPORTS
Tigers tamed as hosts level series
Zimbabwe bounced back in three-match one-day series against Bangladesh with an empathic six-wicket win in the second game as a heroic innings by Abdur Razzak went in vain at the Queens Sports Club at Bulawayo on Sunday. Full story
EDITORIAL
Willingness to make concession key to a fruitful dialogue
THE government-opposition dialogue on the nature and composition of... Full story
OP-ED
What we do today, will pay off tomorrow: the case for midwives
In 10 to 20 years ahead, hopefully every woman has a midwife by her side from early adolescence to when she enters menopause. Every time a young woman needs family planning, when she gets pregnant, wherever... Full story
TIMEOUT
Habib, Ferdous Wahid enthrall audience at IGCC
Popular singer/composer Habib performed along with his father Ferdous Waheed in a concert at the Indira Gandhi Cultural Centre in Gulshan on Saturday. The father-son duo was accompanied by Mithun Chakraborty on drums and Emon... Full story
LETTERS
One nation's growth to another nation's death
The Critical Decade: Global Action Building on Climate Change, a report by the Australian Climate Commission, is an overview of international progress on climate change over the past nine months, looking... Full story
বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় হেফাজত কর্মীদের প্রতিহত করতে পুলিশের সঙ্গে যোগ দেয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। একপর্যায়ে সেখানে হেফাজত নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালানোর চেষ্টা করে। পরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে তারা পিছু হটে। এখানে সংঘর্ষের ঘটনায় সিদ্দিকুর রহমান (২৮) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অর্ধশত পুলিশ ও হেফাজত কর্মী। এখানে হেফাজতের বেশ কয়েকজন কর্মীকে ছাত্রলীগ কর্মীরা পিটিয়েছে। এছাড়া বায়তুল পৃষ্ঠা ১৯ কলাম ৭
পল্টন গুলিস্তান রণক্ষেত্র
প্রথম পৃষ্ঠার পর
মোকাররম এলাকায় পুলিশ-হেফাজত সংঘর্ষে আরো তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। নিহত দু'জন হলেন নাহিদ (২২), জুবায়ের ও অজ্ঞাত (৪০)। এর মধ্যে জুবায়েরের লাশ মতিঝিলের শাপলা চত্বরে রাখা হয়েছে। অন্যদের লাশ ঢাকা মেডিক্যালে রয়েছে। ঘটনার সময় কামাল উদ্দিন নামে একজন হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। একজন পুলিশ সদস্যকে ধরে নিয়ে বেধড়ক পেটানোর পর মাথায় কুপিয়েছে হেফাজত নেতা-কর্মীরা। সন্ধ্যায় দৈনিক বাংলা মোড় থেকে পল্টন ও পল্টন থেকে নাইটিঙ্গেল পর্যন্ত রোড আইল্যান্ডের সব গাছ কেটে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকরা। যে কারণে পুলিশ সেদিকে এগোতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল ৯টার দিকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে শিবির কর্মীরা দলীয় ব্যানার নিয়ে মিছিল বের করলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। একপর্যায়ে শিবির কর্মীরা আশপাশের অলি-গলিতে ঢুকে পড়ে। সেখান থেকে তারা পুলিশের উপর ব্যাপক ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এরপর শিবির কর্মীরা পিছু হটে। বেলা ১১টার দিকে ওই এলাকায় হেফাজত নেতা-কর্মীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। কয়েকটি ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয় ওই এলাকায়। এ সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদের অভ্যন্তরে পুলিশের দু'টি মোটর সাইকেলে আগুন দেয়া হয়। ঘটনার নেপথ্যে শিবিরের নেতা-কর্মীরা ছিল বলে পুলিশ দাবি করেছে। সেখানে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা বৃষ্টির মত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ এ সময় সেখানে টিয়ারসেল ও ফাঁকা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হেফাজত কর্মীরা আরো সংগঠিত হয়ে সহিংসতা বাড়িয়ে দেয়। বেলা দেড়টার দিকে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে দৈনিক বাংলা মোড়ের দিকে পাঠিয়ে দেয়। সেখান থেকেই হেফাজত কর্মীরা পুলিশের উপর ইটপাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের দিকে এগোতে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েকটি আর্মার্ড কার নিয়ে ফাঁকা গুলিবর্ষণ করতে থাকে। এর সঙ্গে চলে টিয়ারসেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড। এছাড়া লাঠি নিয়ে কয়েকশ' পুলিশ সদস্য তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে। কিন্তু হেফাজত নেতা-কর্মীদের ইটের তোপে টিকতে না পেরে তারা পিছু হটে। পুলিশ পিছু হটতে হটতে পুরানা পল্টন মোড়ে অবস্থান নেয়। আর আশপাশের হেফাজত কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়ছিল। এভাবে থেমে থেমে পুরানা পল্টন, বায়তুল মোকাররম, বিজয়নগর, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের আশপাশে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। মধ্যরাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় হেফাজত কর্মীরা শাপলা চত্বরে অবস্থান করছিলেন। আর চারদিক দিয়ে তাদের ঘিরে রেখেছে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি। এর আগে রাত ১০টার দিকে ভবনগুলোতে দেয়া আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিস। রাত ১২টার দিকে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নির্বিচারে বিভিন্ন ভবন ও যানবাহন ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। দেখে মনে হবে, এটা যেন যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোন এলাকা।
বায়তুল মোকাররম ও পুরানা পল্টন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হেফাজত নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ চলার সময় দৈনিক বাংলা মোড় থেকে পল্টন পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশের ফুটপাতের শত শত দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এর মধ্যে বায়তুল মোকাররমের সামনে বইয়ের দোকানও পুড়িয়ে দেয়া হয়। এসব বইয়ের মধ্যে কোরআন শরীফসহ অনেক ধর্মীয় বইও ছিল। এই সড়কের মধ্যে যেখানে গাড়ি পাওয়া গেছে সেগুলোতে নির্বিচারে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। বিকালে হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স কর্পোরেশন ভবনের বেজমেন্টে থাকা ৫০টি গাড়িতে আগুন দেয়া হয়। আগুনের লেলিহান শিখা ভবনটির কয়েকটি তলায় ছড়িয়ে পড়ে। হেফাজত নেতা-কর্মীদের প্রতিরোধের মুখে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ওই এলাকায় পৌঁছাতে পারেনি। সন্ধ্যায় জিপিও'র পেছনের একটি দোতলা ভবনে আগুন দেয় হেফাজত কর্মীরা। এতে অনেক বিদেশি ডাক ও মূল্যবান সামগ্রী পুড়ে যায়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পল্টনে মুক্তি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আগুন কয়েকটি ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বায়তুল মোকাররম মার্কেটের কয়েকটি জুয়েলারি দোকানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুনে প্যারাগন জুয়েলার্স, খান জুয়েলার্স, ফেমাস জুয়েলার্স, তাইওয়াবা জুয়েলার্স পুড়ে যায়। বায়তুল মোকাররম দোকান মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি আতিয়ার রহমান জানান, মার্কেট তালাবদ্ধ ছিল, কোন দোকান লুটের খবর তারা পাননি।
এর আগে সাড়ে তিনটার দিকে হেফাজত কর্মীরা ট্রাফিক (পূর্ব) পুলিশের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পুরো অফিসটিই পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে আগুন দেয়ায় পিয়ারুল ইসলাম নামে পুলিশের এক কনষ্টেবল অগ্নিদগ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় অরো দুইজন কনস্টেবলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
দুপুর ২টার দিকে হেফাজত নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ও র্যাব তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এক পর্যয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুলিশের সঙ্গে যোগ দিয়ে হেফাজতের নেতাকর্মীদের ধাওয়া করে। এ সময় সেখানে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পিছু হটে হেফাজত সমর্থকরা গোলাপ শাহ মাজারের জানালার কাঁচ ভাঙচুর করে গিলাফ নিয়ে চলে যায়। এছাড়া মতিঝিলে কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের কার্যালয়ে হামলা চালায়। বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথও তাদের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি। পরে হেফাজত নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে আবারও আওয়ামী লীগ অফিসে হামলার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ গুলি ছুঁড়লে সিদ্দিকুর রহমান নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। আহত হন বেশ কয়েকজন। জানা গেছে, নিহত সিদ্দিকুর রহমান একটি পরিবহন কোম্পানির বাসের হেলপার। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য ওই বাসটি রিক্যুজিশন করে এনেছিল। আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ জানান, হেফাজত কর্মীরা বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা করার চেষ্টা করলে কর্মীরা তাদের বাধা দেয়।
বিকাল সোয়া তিনটার দিকে বিজয়নগর ও কাকরাইল এলাকায় তাণ্ডব চালায় হেফাজত নেতাকর্মীরা। তারা ভাঙচুর করে একটি পেট্রোল পাম্প। এ সময় তাদের হামলায় আহত হন পেট্রোল পাম্পের কয়েকজন কর্মচারী। ওই এলাকার রোড আইল্যান্ডের গাছগুলো কেটে রাস্তায় ফেলে অবরোধ তৈরি করে বিক্ষোভকারীরা। রাস্তায় গাছ পড়ে থাকার কারণে পুলিশ যানবাহন নিয়ে সামনের দিকে এগোতে পারেনি। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ ইত্তেফাককে বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৩২ প্লাটুন নামানো হয়েছে রাজধানীতে। নাশকতামূলক সব তত্পরতা শক্ত হাতে দমন করা হবে বলেও জানান তিনি। জানা গেছে, হেফাজত কর্মীরা পুরানা পল্টন মোড় ও বায়তুল মোকাররম এলাকা এবং এর আশপাশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার পর পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকলে দুপুরের পর এই ১২ প্লাটুন বিজিবি নামানো হয়। পরে রাতে আরো ২০ প্লাটুন নামানো হয়। রাতে একসঙ্গে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসারের সমন্বয়ে যৌথবাহিনী কাজ করছে।
রাজধানীর পল্টনসহ আশপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের দায়িত্ব পালনকালে ১০ জন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু'জনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সংবাদকর্মীরা হলেন 'দৈনিক জনকণ্ঠ'র সিনিয়র রিপোর্টার ফিরোজ মান্না, 'নিউ এজ'র প্রতিবেদক রফিকুল ইসলাম, গাজী টেলিভিশনের নিজস্ব প্রতিবেদক সাজ্জাদ হোসেন ও ক্যামেরাম্যান লিটন, সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক সাইফুল রুদ্র, মোহনা টেলিভিশনের প্রতিবেদক নাসির উদ্দিন, ক্যামেরাম্যান সজিব, বিডিনিউজের ফারহান ফেরদৌস ও ক্যামেরাম্যান মুন্না। বাকি একজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। আহত দুই সংবাদকর্মী গাজী টেলিভিশনের প্রতিবেদক সাজ্জাদ হোসেন ও ক্যামেরাম্যান লিটনকে হলিফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভর্তি কক্ষের কর্তব্যরত অফিস সহকারী তরিকুল ইসলাম জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অন্তত ৭০ জন চিকিত্সা নিয়েছেন।
এদিকে এই সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের পাঁচজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে। আহত পুলিশের সদস্যরা হলেন নায়েক হান্নান, কনস্টেবল আনোয়ার হোসেন ও সাদ্দাম এবং বিজয়নগর কার্যালয়ে দেয়া হেফাজতের আগুনে অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল পিয়ারুল। অন্যজনের নাম জানা যায়নি।
সর্বশেষ
রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর দৈনিক বাংলা মোড় ও ফকিরাপুলে পুলিশের সঙ্গে হেফাজত কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ফুটপাতের দোকান, রাস্তার আইল্যান্ডে আগুন ধরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি হেফাজত কর্মীরা এ সময় পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর বৃষ্টির মত ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টিয়ারগ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল। এদিকে একই সময় শাপলা চত্বরের অদূরে মতিঝিল থানার সামনে মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে হেফাজত কর্মী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। তবে সেখানকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। পুলিশের সতর্ক অবস্থানের কারণে সেখানে সংঘর্ষে জড়াতে পারেনি হেফাজত।
দমে গেল হেফাজতি জোশ
মধ্যরাতে শাপলা চত্বরের দখল নিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী
গত মধ্যরাত পর্যন্ত মতিঝিল শাপলা চত্বর হেফাজতিদের দখলে থাকলেও রাত তিনটার দিকে দৃশ্যপট পাল্টে যায় র্যাব-বিজিবি-পুলিশের যৌথ সাঁড়াশি অভিযানে। এসময় প্রচুর গোলাগুলি, বিস্ফোরণ ও ছুটোছুটিতে মতিঝিল ও আশপাশের এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এর মধ্যেই ছত্রখান হয়ে যায় হেফাজতের সমাবেশ। জুতা-স্যান্ডেল ফেলে গোপীবাগ ও শাপলা চত্বরের পাশের গলি দিয়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায় অগণন হেফাজতকর্মীকে। কাউকে-কাউকে রাস্তার পাশে পড়ে থাকতেও দেখা গেছে। তারা মৃত না জীবিত, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়াও আটক করা হয় কয়েকশ অবরোধকারীকে। এর আগে গতকাল রোববার বিকেলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন ডেকে সন্ধ্যার মধ্যে হেফাজতিদের ঢাকা ত্যাগ করার আহ্বান জানান। নইলে সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি। কিন্তু এ আহ্বান উপেক্ষা করে হেফাজতের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা শাপলা চত্বরেই অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তারা এ-ও ঘোষণা দিয়েছিলেন, হেফাজতের আমির আল্লামা শফী সমাবেশস্থলে সশরীরে উপস্থিত হয়ে দিক-নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তারা শাপলা চত্বর ছাড়বেন না। হেফাজতিদের উদ্দেশে আল্লামা শফীর প্রেরিত বার্তায়ও দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত শাপলা চত্বর না-ছাড়ার নির্দেশ ছিল।
উল্লেখ্য, রোববার সকাল সাড়ে এগারোটা থেকেই হেফাজতের অবরোধ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। দফায়-দফায় হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সংঘর্ষে রাজধানী পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। হেফাজতের মধ্যে থাকা জামায়াত-শিবিরকর্মীরাই এই সহিংসতা শুরু করে বলে জানিয়েছে সংগঠনটির একটি সূত্র। অবরোধের আগে গোয়েন্দারাও এমন আশঙ্কা করেছিল। তবে গতকাল পুলিশের সঙ্গে বেশিরভাগ সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দেখা গেছে হেফাজতকর্মীসমর্থকদেরই। এদিকে হেফাজত নেতা-কর্মী-সমর্থকরা রাতেও শাপলা চত্বর না-ছাড়ায় তাদের হটাতে সরকারি করণীয় নিয়ে নীতি নির্ধারণী মহলে বৈঠক হয়। হেফাজত আমিরের সঙ্গেও সরকারের প্রতিনিধিরা বৈঠক করেন।
মতিঝিলের সমাবেশে উপস্থিত না হলেও হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। গতকাল রাত সোয়া ৮টায় তিনি এ ঘোষণা মিডিয়ায় প্রচার করতে নির্দেশ দেন বলে এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন হেফাজতের মিডিয়া সেলের প্রধান মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াসেল।
সরেজমিন দেখা গেছে, পল্টন, স্টেডিয়াম, বিজয়নগর, মতিঝিল এলাকার ফুটপাত, গ্যাসলাইন, দোকানপাট, সিপিবি কার্যালয়, রাস্তার চলমান গাড়িতে আগুন দেওয়াসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিককে পিটিয়েছে হেফাজত ও ছাত্রশিবির নেতা-কর্মীরা। গতকাল দুপুর ১২টায় পল্টনের বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের ওভারব্রিজের নিচে শ'দুয়েক অবরোধসমর্থক লাঠি আর রড নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে হামলার জন্য রওনা দিলে পল্টনে পুলিশ বাধা দেয়। এভাবেই শুরু গতকালের ভয়াবহ সংঘর্ষ। গতকাল ফজরের নামাজের পরপর রাজধানীর ছয়টি পয়েন্টে অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিল হেফাজতে ইসলাম। প্রায় প্রত্যেক হেফাজতকর্মীর হাতেই ছিল লাঠি। ঢাকায় প্রবেশের আগে প্রায় প্রতিটি লাঠির মাথায় ছিল জাতীয় পতাকা। শাপলা চত্বরে আসার পর নব্বইভাগ লাঠিতেই পতাকার কোনও অস্তিত্ব ছিল না। উল্লেখ্য, লংমার্চের আগে জাতীয় পতাকায় আগুন দিয়েছে এই হেফাজত। মূলত জাতীয় পতাকাকে ঢাকায় প্রবেশের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে গতকাল হেফাজতিরা।
দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনা ছাড়া তেমন কোনও অঘটন ঘটেনি। কিন্তু অবরোধের পর রাজধানীর বায়তুল মোকাররম এলাকায় সমাবেশ করার বিষয়ে হেফাজতের নেতারা অনড় থাকলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি স্পটে। দুপুর ১টার দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের অনুমতি দিলে হেফাজতের নেতা-কর্মীরা দলে-দলে রাজধানীতে প্রবেশ করে। ঠিক দুপুর ১টায় শাপলা চত্বরে একটি ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চে হেফাজতের সমাবেশ শুরু করেন মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন।
এদিকে পল্টন-বায়তুল মোকাররম ও স্টেডিয়াম এলাকায় সংঘর্ষে ছাত্রশিবির সক্রিয় ছিল বলে আমাদের সময়ের কাছে স্বীকার করেছেন যাত্রাবাড়ীর একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন মো. ইব্রাহিম। তিনি বলেন, আমি সকাল ৯টা থেকে পল্টন মোড়ে ছিলাম। দুপুরে সংঘর্ষের শুরু থেকেই বুঝছি, এরা শিবির। আমরা বললাম, যান ভাই, সমাবেশ তো শাপলা চত্বরে। কিন্তু তারা বলে, না পল্টনে, শাহবাগে হেফাজতের নেতাদের নাকি বাধা দেওয়া হচ্ছে। প্রেসক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান, বায়তুল মোকাররম এলাকা সংঘর্ষে তাদের হাত আছে।
সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই লাখো সমর্থক রওনা হয় মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকা, কলেমা খচিত পতাকা আর মাথায় বাঁধা নাস্তিকদের বিচার দাবিতে ফেট্টি। শাপলা চত্বরের কাছাকাছি হতেই পতাকার সংখ্যা কমতে থাকে।
সমাবেশে হেফাজত নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমাদের আলেমদের হত্যা করা হচ্ছে। আমরা এ রক্তের প্রতিশোধ না নিয়ে যাব না। ঢাকা মসজিদের নগরী। এই নগরীকে রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে। সরকারের যদি বঙ্গোপসাগরের সমান রক্তের প্রয়োজন হয়, আমরা তার চেয়েও বেশি রক্ত দিতে প্রস্তুত। আমাদের ইতিহাস শাহাদাতের ইতিহাস। আমরা যুগে-যুগে রক্ত দিয়েছি। প্রয়োজনে এক সাগর রক্ত দিয়ে আল্লাহর দ্বীন কায়েম করব ইনশাআল্লাহ। সংগঠনটির নায়েবে আমির মুফতি ওয়াক্কাস বলেন, হেফাজত নেতাদের আটক ও গুলি করে আমাদের ঈমানি আন্দোলন স্থগিত করা যাবে না। গায়ের জোরে আল্লাহর ওপর আস্থা সংবিধান থেকে উঠিয়ে দেওয়ায় সরকারের অন্তর থেকে ঈমান উঠে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার পিতার নামে কিছু বললে তার বিচার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে করতে পারেন আর আল্লাহ-নবীর নামে কিছু বললে কিছু করতে পারেন না কেন, জানতে চাই। কেয়ামতের ময়দানে আপনার স্থান হবে জাহান্নামে। এটা আমার কথা না, এটা কোরআনের কথা।
গুজব আর কোন্দলের সমাবেশ
বিকাল ৩টার দিকে গুলিস্তান এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হেফাজত-শিবিরের সংঘর্ষ চলাকালে সমাবেশমঞ্চে একের পর এক গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কখনও ৫ জন আবার কখনও ১০ জন নিহত হয়েছে বলে শোনা যায়। এরকম গুজবের সঙ্গে ছিল মঞ্চে হেফাজতের শরিক ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বন্দ্ব-কোন্দল। বিকালে ছাত্র মজলিসের সভাপতি আবুল কাশেমকে বক্তৃতা দেওয়ার আহ্বান জানানো হলেও তার পরিচয় না বলায় মঞ্চের সামনে কথাকাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়ে খেলাফতে মজলিসের উভয় অংশ। এসময় মুনতাসির আলী ও আতাউল্লাহ আমিনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এছাড়া ছিল একটু পরপর স্বেচ্ছাসেবকদের নানা উচ্ছৃঙ্খলতা। এসব নিয়ে মঞ্চে থাকা কেন্দ্রীয় নেতারা বিব্রত ছিলেন।
হেফাজতিরা পিশাচ, মানুষ রূপী শয়তান -ইমরান এইচ সরকার
তিনি আরো বলেন, "সাভারের দুর্ঘটনার পর আমরা দেড় হাজার ব্যাগ রক্ত দিয়েছি, আরো পাঁচ হাজার লোকের নাম ঠিকানা রেখে দিয়েছি। রক্তের প্রয়োজন হলেই আমরা আহতদের মাঝে পৌঁছে দেব।"
তিনি হেফাজতে ইসলামকে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা আখ্যা দিয়ে একে জামায়াত রক্ষার সংগঠন হিসেবে অভিহিত করেন।
এছাড়া শোকসভায় হেফাজতে ইসলামের আমির আহমদ শফীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতারের দাবি জানান লেখক সৈয়দ শামসুল হক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
সৈয়দ শামসুল হক বলেন, "৫ মে'র পর সরকারের পতন ঘটানো হবে, এই ঘোষণা দেয়ার পর শফী কোনোভাবেই বাইরে থাকতে পারে না। এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বিদ্রোহ। আমি এই ঘোষণায় ক্রুদ্ধ। এই ক্রোধ প্রকাশের জন্যই এখানে এসেছি।"
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, "দেড় কোটি তরুণ ভোটারের কথা মাথায় রেখে সরকারকে বলবো আপসের পথ পরিহার করুণ। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করুন। "
তিনি বলেন, "হেফাজতের আমির শফীকে অবশ্যই গ্রেফতার করতে হবে। ইসলামের নামে জামায়াতের হেফাজতকারী এই ব্যক্তির কোনো অধিকার নেই হেলিকপ্টারে করে ঘুরে বেড়ানোর।"
নারীনেত্রী খুশী কবির বলেন, "মে আমরা ঢাকায় অবস্থান নেব। হেফাজতকে ঢাকায় প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।"
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন, উদীচীর সভাপতি কামাল লোহানী, শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি নেতা এমএম আকাশ, জাবি ভিসি ড. আনোয়ার হোসেন।
সহিংসতায় বিজিবি-পুলিশের তিন সদস্যসহ নিহত ৭
এরপরই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে তাদের ব্যাপক সংঘর্ষ শুরু হয়। এসময় তারা বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর ও কয়েকটি গাড়িতে আগুন দেয়। সর্বশেষ বেলা সোয়া ১১টার দিকে শিরাইল মোড়ে পুলিশ-বিজিবি এবং কুয়েত প্লাজার পাশে হেফাজত অবস্থান নিযেছে।
এর আগে হেফাজত কর্মীরা কাঁচপুর পুলিশ ফাঁড়ি ও সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে আগুন দেয়।
জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জ মাদানী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও হেফাজতের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের সংঘর্ষ শুরু হয়। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি এসে যোগ দেয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সকালে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মীরা সিদ্ধিরগঞ্জ মাদানি মাদরাসায় হামলা করে আগুন লাগানোর চেষ্টা করে। এ সময় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ মাইকে প্রতিরোধের ঘোষণা দিলে ছাত্রলীগের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ফুটপাতের প্রায় ২৫টি দোকানের চৌকিতে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং ২০ থেকে ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে পুলিশ প্রায় দুই থেকে শত শত রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে তিনজন গুলিবিদ্ধ ও প্রায় শতাধিক আহত হয়।
গুলিবিদ্ধ ব্যক্তিদের সিদ্ধিরগঞ্জ মা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করে। আহতরা ওই হাসপাতালসহ অন্যান্য ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সকাল ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম হতাহতের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। শহরে ও ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
-
হেফাজতে জামাতের ভন্ড আহমেদ শফি কে চিনুন তার মুখের গালি শুনে ...
Facebook is a social utility that connects people with friends and others who work, study and live around them. People use Facebook to keep up with friends, upload an unlimited number of photos, post links and videos, and learn more about the people they meet. হেফাজতে জামাতের... | Facebook
হেফাজতে জামাতের সমাবেশ ও একটি স্বাধীনতার চেতনায় প্রতিষ্ঠিত পেজের আত্ম কাহিনী- প্রথম অংশটি দেখে অনেকেই হয়ত ভাবছেন যে ওই রাজাকারদের দোসর হেফাজতে জামাতের সমাবেশের সাথে আবার একটি স্বাধীনতার চেতনায় প্রতিষ্ঠিত পেজের কি সর্ম্পক্য থাকতে পারে? ব্যাপারটা একটু ভেঙ্গে বলছি। তার আগে বলে রাখি পেজের নাম দেখেই হয়ত সবাই বুঝতে ...হেফাজতে জামাতের এইগুলো নাকি অরাজনৈতিক বক্তব্য - বাঁধ ভাঙার আওয়াজ
এক নজরে জামায়াতের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে এখন পর্যন্ত যা হলো : ১। সমাবেশের বক্তা বলছেন তারা জাতীয় পতাকা মানে না ।। ২। তাদের দাবীতে নারী পুরুষ এক সাথে বিচরণ ও নারীদের পর্দা প্রথার ব্যাপারে বক্তব্য থাকলেও জামায়াতের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে খালেদা জিয়ার...
১১ই এপ্রিল হরতাল বিরোধী নিরস্ত্র শোভাযাত্রায় হেফাজতে জামাতের ...
যুদ্ধাপরাধীদের দল... | Facebook
যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াত-শিবিরের প্ল্যান ছিল শাহবাগে হামলা চালিয়ে একটা খুনাখুনি বাধিয়ে একটা তাৎক্ষনিক হরতাল দিলে হেফাজতিরা ঢাকায় আটকে যাবে! এরপর এদের উস্কিয়ে কন্টিনিউ করবে তাদের গেমপ্ল্যান! সে কারনে তারা রমনা পার্ক, রূপসী বাংলা হোটেল, সোহরাওয়ার্দি উদ্যান, কাঁটাবন মসজিদ এমন সব পথ দিয়ে শাহবাগ পৌঁছবার চেষ্টা ...সংবাদ// ঢাকায়... | Facebook
ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত আলব্রেখট কনজে হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবিকে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ... তাই যত তারাতারি সম্ভব পশ্চিমাদের বাংলাদেশ সরকারকে সহযোগিতা করা দরকার, যাতে করে ইসলামের নামে হেফাজতিরা পৃথিবী ব্যাপী সন্ত্রাসের সূতিকাগার হিসেবে বাংলাদেশেকে ব্যবহার ...৫ ই মে হেফাজত ইসলামের ঢাকা অবরোধ নিয়া কি বলব খুঁজে পাচ্ছিনা। কথা ছিল এই অবরোধ হবে শান্তিপুর্ন। শান্তির নমুনা আজ দেখলাম। শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে লাঠি আনে কেউ এটা প্রথম দেখলাম। শান্তিপুর্ন অবরোধ বা সমাবেশের ফলে আজ অফিসকেই বাসা বানিয়েছি। রাস্তাঘাট বন্ধ করে আমার মত সাধারন মানুষকে বাক্সবন্ধি করাই হইছে শান্তিপুর্ন সমাবেশ। কোরআন শরীফ পুড়িয়ে, দোকানপাট লুটপাট করে, সহিংসতা চালিয়ে, বাংলার মানুষকে আতংকের মধ্যে রেখে তারা তাদের শান্তিপুর্ন(!!) সমাবেশের নমুনা দেখালো। "নারায়ে তাকবির/আল্লাহু আকবার, হেফাজতের বাংলায়/বলোগারদের(ব্লগার) ঠাঁই নাই, একটা দুইটা বলোগার ধর/ধইরা ধইরা জবাই কর, আমার ভাইয়ের রক্ত কেনো/শেখ হাসিনা জবাব দে" এই শ্লোগান দিয়ে তারা বুঝিয়ে দিয়েছে তারা শান্তিপ্রিয় সংঘটন। কিন্তু কথা হচ্ছে এদের এই শান্তিপুর্ন(!!) সমাবেশ দেখে আমার ধর্ম নিয়ে কেউ যদি ভুল কোন ধারনা পোষন করে সেই দায় ভার কে নেবে? মাথায় টুপি পরে যারা এই তান্ডবলীলা চালাচ্ছে, তাদের মুখে চোখে একবার একটু ভাল করে তাকিয়ে দেখেন তো- কারো মাঝে কি শান্তির ধর্ম ইসলামের বিন্দু মাত্র উপস্থিতি আছে কিনা। ইসলামের কোন শিক্ষা তো দুরাশা! জামাতের আন্ডারগার্মেন্টস পরা এই সব হেফাজতি নিজেরাই এখন ধর্মের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি।
যুগ যুগ ধরে ধর্মকে পূজি করে এক শ্রেণীর মানুষ নিজেদের স্বার্থসীদ্ধি করার লক্ষ্যে কিছু ঈমানী দূর্বল লোকদের কে ব্যবহার করে থাকেন। মূর্খ ও অর্ধশিক্ষিত লোকের সমন্বয়ে কিছু লোকদের পেশি শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করে সমাজের গাঁ বাঁচানো কিংবা টকশোতে ঝড় তুলার দূর্বল হৃদয়ের তথাকথিত কিছু ভদ্রলোকদের নজর কাড়ার চেষ্টা করেন। আবার টাকার বিনিময়ে বিতর্কিত মিডিয়ার নজর কাড়ার মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান পরিস্কার করেন। হেফাজতের শফিরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যেভাবে বক্তব্য দিয়ে আসছে, তা শুধু অপরাধই নয় রীতিমত রাষ্ট্রযন্ত্রের শক্তিগুলো কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া। দেশের আলেম সমাজ কে লাঞ্চিত করা, নিজেদের কে আল্লাহ্'র চেয়েও বেশী কিছু ভাবা সত্যিই দুঃখ জনক।
আমাদের দেশের পানি ঘোলা হয়ে গেছে। এ মুহুর্তে সবচেয়ে জরুরি কাজ হচ্ছে, ঘোলা পানি পরিষ্কার করা। বাংলাদেশে পানি ঘোলা রাখা খুব বিপদজনক। এদেশে কিছু সুযোগসন্ধানী মাছ শিকারী আছেন, যারা ঘোলা পানি ছাড়া মাছ ধরেন না। এরা যখন মাছ ধরা শুরু করেন, তখন দেশে দুর্যোগ নেমে আসে। হেফাজতিরা ঢাকায় অবস্থান করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৩ দফা দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। এর মধ্যে বেগম জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের এবং ঢাকাবাসীকে হেফাজতের পাশে গিয়ে দাঁড়ানোর জন্য। এটাই এখন 'ঘোলা পানি'। সরকারের উচিত এই পানি অবিলম্বে 'পরিষ্কার' করা। তবে ঘোলা পানি পরিষ্কার করতে গেলে সরকারের অবস্থানও পরিষ্কার করতে হবে। হেফাজতের আড়ালে জামাত আছে, জামাতের আড়ালে দুষ্কৃতিকারী আছে, এইসব পিছলা কথায় কাজ হবে না। সরকারকে পরিষ্কার করে বলতে হবে, ১৩ দফা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব বিরোধী। কাজেই যারা ১৩ দফা বলে চিলাচ্ছেন, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী। যারা বাংলাদেশকে তালেবান ফরমেটে দেখতে চান, তারাই জঙ্গি।
রাষ্ট্রদ্রোহী এবং জঙ্গি নিয়ন্ত্রণে এবং দমনে যা যা করা দরকার - সরকারের ঠিক তাই তাই করা উচিত, এখনই। আমরা সরকারের কাছে চাইবো নিরাপত্তা। ধর্মের চেয়ে, ভোটের চেয়ে, ইলেকশনের চেয়ে মানুষের জীবন বড়ো। সরকারকে এটা বিশ্বাস করতে হবে এবং মানুষের জানমাল রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে। ধর্ম, রাজনীতি আর ভোট নিয়ে- পানি যেভাবে ঘোলা হয়েছে- এই ঘোলা পানি থেকে রাষ্ট্রকে বের করে আনতে হবে। দিন শেষে মানুষ কিন্তু পরিষ্কার পানি, পরিষ্কার রাজনীতি এবং পরিষ্কার ধর্মীয় মূল্যবোধে আস্থা রাখে।
- See more at: http://www.nagorikblog.com/node/12068#sthash.LzLBrVCW.dpuf
রাতে শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতের কর্মীদের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হটিয়ে দিলেও সোমবার সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতের কর্মীরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপর আক্রমন করছে । সংর্ষষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ জন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও অন্যজন সাধারন নাগরিক।
যে পরিমাণ কুরআন আজকে পুড়ালো ১৪০০ বছরেও সারা পৃথিবীতে এত কোরআন পুড়ে নাই। এমনকি চেংগ...See More
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়া খেয়ে শাপলা চত্বর ত্যাগ করার আগে পুরো মতিঝিলকেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে বিদায় নিয়েছে হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা।
মতিঝিলের সবগুলো সড়কের বিভাজন নিশ্চিহ্ন করে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয় তারা। এছাড়া দোকানপাট, গাড়ি সহ বিভিন্ন স্থানে আগুন দিয়ে প্রায় পুরো মতিঝিলকেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে তারা।
শুধু তাই নয়, পুলিশ যেদিক থেকে হেফাজতের কর্মীদের পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেয় সেই যাত্রাবাড়ির দিকের সড়কেরও বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা।
গাড়ি ভেঙে, মানুষ পিটিয়ে, গুলি করে, গাছ উপড়ে আগুন দিয়ে, মসজিদ মার্কেটে আগুন দিয়ে কোরানশরিফ পুড়িয়ে, মানুষ হত্যা করে এরা এসেছে ইসলামের হেফাজত করতে। পুরো এলাকার রাস্তা খুড়ে, রোড ডিভাইডার ভেঙে পুরো এলাকাকে ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে এরা এসেছে গণজাগরণ মঞ্চের সাথে টেক্কা দিতে। আসার পথে সারা রাস্তা মেয়েদের অশ্লিল অশালিন ভাষায় টিজ করতে করতে এসেছে। শাহবাগে দিন রাত এক করে ছেলে মেয়েরা থেকেছে। তাদের ভাষায় এই সব নষ্ট ছেলেদের মাঝে কোন মেয়েই নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত হয়নিতো ! শাহবাগ থেকে কয়েক পা দূরে কাটাঁবন মসজিদ যা জামায়াত-শিবিরের আস্তানা হিসেবে পরিচিত, তবু তো ওখানে কেউ হামলাতো দূরে থাক একটা ঢিলও ছোড়েনি? এর পরেও নাস্তিক আর নষ্ট খেতাব মাথায় নিতে হয়েছে।
তবে আবার প্রমানিত হলো একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখনো যথেষ্ট শক্তিশালী। প্রত্যেকের শিক্ষা নেয়ার সময় এসেছে, চাইলেই যা খুশি করা মানে স্বাধীনতা নয়। এর একটা সীমা আছে এবং সেটা লঙ্ঘন করলে কি হতে পারে!!! আমি আবারো বলছি প্রত্যেকের মনে রাখা উচিৎ তার সীমা কতদূর.....
আমার কষ্ট লাগে ওই বাচ্চাগুলো দেখলে যাদের বাবা মা হয়তো বাধ্য হয়ে ৩ বেলার খাওয়ার নিশ্চয়তা দিতে তার বাচ্চাটাকে মাদ্রাসায় দিয়েছিল। বাচ্চা জানেওনা আজ কার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তাকে রাস্তায় নামতে হয়েছে। এই বাচ্চাগুলো যেন নিজের মায়ের কোলে ফিরতে পারে এই কামনা করি। হয়তো কারো ফেরার মত কোন মমতার কোল এই পৃথিবীতে নেই। সে হয়তো এই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একবুক ঘৃনা নিয়ে বড় হবে এবং হয়ে উঠবে কোন জঙ্গী সংগঠনের সদস্য। এখন মনে হয় আমরা খাদের কিনারায় দাড়িয়েছি দেশের শিক্ষানীতি নিয়ে না ভেবে উপায় নাই।
আহ্ আযান শুনি কত দিন..... মনে হচ্ছে কত লক্ষকোটি বছর পরে ঘুম ভাঙা এই সকাল টা এই আযানের ধ্বনি কতই না সূমধুর।
////Fatema- Tuz- Zohora
No comments:
Post a Comment