BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE 7

Published on 10 Mar 2013 ALL INDIA BAMCEF UNIFICATION CONFERENCE HELD AT Dr.B. R. AMBEDKAR BHAVAN,DADAR,MUMBAI ON 2ND AND 3RD MARCH 2013. Mr.PALASH BISWAS (JOURNALIST -KOLKATA) DELIVERING HER SPEECH. http://www.youtube.com/watch?v=oLL-n6MrcoM http://youtu.be/oLL-n6MrcoM

Welcome

Website counter
website hit counter
website hit counters

Friday, October 11, 2013

দ্য গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস

দ্য গ্রেট বেঙ্গল সার্কাস
ওরফে দুর্গাপুজো৷ আবার সে এসেছে ফিরিয়া৷ এক বছরের হাপিত্যেশ প্রতীক্ষার পর৷ হুল্লোড়, ট্র্যাফিক জ্যাম, ক্লাবের ঝগড়া, নাটকের রিহার্সাল- সবটুকু নিয়ে৷ লিখছেন অমিতাভ মালাকার৷ ছবিতে উদয় দেব

সব দুর্গাপুজো একটা মিটিং ডেকে শুরু হয়৷ একদল খুব উত্‍সাহী লোক জুন মাস নাগাদ হই চই করে ওঠে, আর অন্য এক দল লোক তাদের দিকে আড়চোখে পিটপিট করে চায় আর গাছতলা, ক্লাবের বারান্দায় গোঁজ হয়ে বসে বিড়ি ফোঁকে৷ উত্‍সাহীর দল 'অমুক তারিখে অত ঘটিকায়' লেখা সাদা ফুলস্কেপ কাগজ ক্লাবের দেওয়ালে সেঁটে মিটি মিটি হাসে৷ কোথাও আবার পাজামা পাঞ্জাবি পরা ভদ্রলোকেরা নিজেদের পছন্দের লোকেদের বাড়ি গিয়ে জানিয়ে আসে কোন দিন মিটিং হবে- 'আপনাকে কিন্ত্ত আসতেই হবে বুনিকদা'৷ গোঁজ প্রার্থীরা মিটিং-এ দু'কাপ করে চা খায় আর বলে 'তোরা কর না, আমরা তো আছিই', তার পর পঞ্চমীর দিন শিলং বেড়াতে যাবার টিকিট রিজার্ভেশনের জন্য কয়লাঘাটে লাইন দেয়৷ কিছু লোক এদিকে না ওদিকে বোঝা যায় না৷ তারা অষ্টমী পুজোর খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনিতে খেজুর দিলে সুগারের রোগীদের অসুবিধে নিয়ে চেঁচায়৷ তাদের কথা কেউ শোনে না৷ পাড়ায় এই সময় থেকেই ভ্রাম্যমাণ জামাকাপড় বিক্রেতারা আসতে শুরু করে৷ ফুলিয়া, বোম্বাই, দক্ষিণের ভয়ানক খটমট সব নামওলা শাড়ি- যত খটমট, তত বেশি দাম৷ ধার বাকি চলে, বিজয়া দশমীর পর হপ্তা দেড়েক এরা বাড়ি বাড়ি নাড়ু আর নিমকি খেয়ে 'নাঃ, অ্যাসিড হয়ে যাবে, চা আর খাবো না' বলে ওঠার সময় 'আমারটা যদি এবার দিয়ে দেন তো...' ইত্যাদি করুণ গলায় কাঁদাকাটা সেরে ফের অন্য পাড়ায় অন্য বাড়িতে গিয়ে বেল বাজায়- 'দাদা আছেন? বউদি ভালো তো? কী বাবু, পুজোয় ক'টা জামা হল?' ইত্যাদি বাঁধা গত আউড়ে আড়চোখে ঘরের ভিতরটা দরজার চিলতে ফাঁক দিয়ে দেখে 'আজ আর বসব না, খুব তাড়া...' বলে টলে জোর করে ঠেলে ধাক্কিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে৷

মিটিং সেরে একদল দৌড়োয় ডেকরেটারের আপিসে- তিনি মহা ব্যস্ত লোক, পুজোর আগে শ্রাদ্ধের সম্ভাবনা আছে এমন লোকেদের পারলে গলা টিপে মেরে কাজ এগিয়ে রাখেন৷ তিনটে মোবাইল, একটাতেও ওনাকে পাওয়া যায় না৷ প্যান্ডেলের বাজেট দেন ষাট হাজার টাকা, উদ্যোক্তারা সাড়ে পনেরো হাজারে এই বারেরটা নামিয়ে দেবার জন্য জোরাজুরি শুরু করেন৷ কিন্ত্ত বাইরেটায় টেরাকোটার কাজ চাই আর তিনটে গেট, একটা আপিস ঘর, একটা কালচারাল অনুষ্ঠানের স্টেজ যার উপরে বাউলরা নাচবে, তিনশো চেয়ার আর কুড়িটা টেবিল দিতেই হবে৷ ডেকরেটার ভদ্রলোক মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাই পুজোর আগের এই সময়টায় রোজই একটু বেশি রাতে চিকেন তন্দুরি আর হুইস্কি খান৷ উদ্যোক্তারা চেলাদের 'স্টেজের সামনে এক লরি মাটি ফেলিয়ে দিস ভাই' ইত্যাদি বলে টলে টলে বাড়ি ফিরে পুজোয় বেড়াতে আসা শ্যালিকার দিকে চেয়ে কী যেন ভেবে শাশুড়ির সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে ভায়রার সঙ্গে জাস্ট দু'পেগ মাল টানতে বসেন৷ পুজোর পর দিঘায় বেড়াতে যেতে হবে গায়ের ব্যথা মারতে, বউ অলরেডি দুটো নাইটি কিনেছে৷ ফেরার পথে দর করে সওদায় জিতে যাওয়া কাজু বাদাম দিয়ে মুরগির রেসিপি ওল্টাচ্ছে রোজ, তাই বাড়িতেও মিটিং৷ রাত দেড়টা নাগাদ ক্লাবের মাঠে প্রতিদিনই চিত্‍কার চেঁচামেচি৷ আবুদা বাঁকুড়া, বীরভূম থেকে পটুয়া এনে হংসেশ্বরী মন্দিরের ডিজাইন দিয়েছিল৷ শিল্পীরা ডেকরেটারের লোকেদের কী যেন বুঝিয়ে ব্যাপারটাকে ক্রমশই তাজমহলের দিকে টানছে, উইথ সাটল্ টাচেস অব ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল৷ চিফ আর্টিস্ট বোম্বাইতে গিয়েছিলেন এক বার, সেখানে কেউ তাঁকে ওই হাসপাতাল দেখিয়ে বলে 'ওই দ্যাখ অমিতাভ বচ্চনের বাড়ি', সেই থেকে হয়তো সুপ্ত ইচ্ছে ছিল ওই রকম প্যান্ডেল বানাবেন৷ আবার রাতের দিকে কথা কন না বিশেষ, আবুদা চেঁচাচ্ছে, আর উনি চোখ বুঁজে গান গাইছেন- 'ওরে ভোলা মন, কেমন বাড়ি বানাইয়াছে, অমিতাব্বচ্চন৷' ডেকরেটারের চামচেগুলো থেকে থেকেই জামার খুঁটে চোখ মুছে ফোঁপাতে ফোঁপাতে ওনার পায়ে মাথা ঠুকে প্রণাম করছে৷

পাড়ার সন্ধেবেলাগুলো কৈশোরের দখলে৷ একতলার বড়ো ঘরটায় নাটকের রিহার্সাল চলছে৷ কমরেডদের পড়াশুনা নাই৷ পাড়ার কোণ ঘেঁষে যে দিকটায় রাস্তায় আলো কম, সেই দিকে কোনও একটা বাড়ির একতলার রান্নাঘরের পিছন দিকের কামরায় নাকি পাড়ার কয়েকজন বউদি গান প্র্যাকটিস করছেন৷ অভিজিত্‍দা স্পষ্ট শুনেছে ভিতর থেকে ফিসফিসে খোনা গলায় কারা যেন 'সংকোচের বিহ্বলতা নিজেরে অপমান' গাইছে৷ শুনে বৃদ্ধ কয়েক জন আড্ডা ছেড়ে সোজা ঘরপানে ছুট দিলেন কাঁপতে কাঁপতে৷ ঘটনাটি হয়তো সত্যি, একজন ঘাড়ে পাউডার মাখা বাবরি চুলো সিড়িঙ্গে তবলচি টাইপকে হামেশাই সন্ধের পর পাড়ার রাস্তায় দেখা যাচ্ছে আজকাল৷ এক ষোড়শী নাকি তার প্রেমেও পড়েছে৷ ছেলেরা মওকা মতো পেলে ধোলাই দেবার জন্য প্রস্ত্তত হচ্ছে৷ এর মধ্যে পঞ্চমীর রাতে প্রতিমা আনার তোড়জোর৷ বাসে করে মহিলা ও শিশু, উঠতিরা ট্রাকে মাটাডোরে আর বয়স্করা নিজ নিজ গাড়িতে৷ গোঁজরা আলাদা যাবে- ওদের পুরোটাই রহস্যাবৃত৷ যাচ্ছে সিরিফ 'এহেহেহেহে, মা তো ট্যারা, আর পেঁচাটাকে টম হ্যাঙ্কস্-এর মতো দেখতে' ইত্যাদি বলার জন্য, তবু যাবে৷ ওখানে গিয়ে নিজেদের গাড়ির বুট থেকে মদের বোতল বের করে খাবে অন্যদের মতো, আর কেউ একটা বমি করা এস্তক সমানে সারা রাস্তা বলতে বলতে আসবে 'আগেই বলেছিলাম অমল পালেকরকে দিয়ে ঠাকুর বানা, শুনল না, আমার কথা কেউ শোনে না, আমি একা, বড়োই একা, অ্যালোন, অ্যালোন, অ্যালোন৷' প্রতিমা মণ্ডপে তোলার পর দেখা যাবে সিংহের লেজ ছাড়া সবটুকুরই প্রায় অ্যালায়েড বম্বিং-এর পর ড্রেসডেন৷ টম হ্যাঙ্কসকে, মানে প্যাঁচাটাকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না, পরে বিয়ারের পেটি থেকে কে অমন চোখ গোলগোল করে চেয়ে আছে দেখতে গিয়ে ওকে খুঁজে পাওয়া গেল৷ ততক্ষণে অবশ্য গায়ে চিলি আর পুদিনা সস্ মেখে সে টিয়াপাখির রূপ ধরেছে৷ তাতে অসুবিধে ছিল না, কিন্ত্ত মাস ইনেব্রিয়েশানের ফাঁক গলে নবমীর সন্ধ্যায় প্রোগ্রাম এনশিওর্ড করতে পেরে অত্যুত্‍সাহী এক বাউল সেটিকে প্রথমে জলে ধুয়ে তার পর গোটাটাকেই আলতা মাখিয়ে রং করায় সেবার বহু শিশুই জীবনের প্রথম দুর্গাপুজোয় লাল পেঁচা দেখার সুযোগ পেলে৷ ধর্ম সম্পর্কে গোড়া থেকে স্কেপটিকাল হওয়ার সুযোগও ছিল, কারণ কোনও এক অজ্ঞাত আর্টিস্টিক ইন্সপিরেশনের ফলেই হয়তো লক্ষ্মী গণেশ ইত্যাদি সবাইকেই সহোদর এবং তাদের বাহনদের দিকে আড়চোখে সন্দেহজনক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়৷ প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গেল, আর্টিস্ট বললেন পরে মেক আপ করে দেবেন- 'কিন্ত্ত দোষটা আপনাদেরই, ওই তো উনি বলেছিলেন এ বারে লুকটা যেন অন্য রকমের হয়৷' এর পর আর কথা চলে না৷ ও দিকে উঠতিদের কয়েকজন মেইন রোডে পুলিশের জিপে হেলান দিয়ে মদ খেয়েছে শুধু তাই নয়, সাব ইন্সপেক্টর 'একটু সরে দাঁড়াবেন দাদা, গাড়িটা নিয়ে থানায় যেতাম' বলায় উঠতি গ্রুপের আবু সালেমটি বলেছে 'আব্বে চল, বেসসি ছলকাবি তো সোজ্জা ট্রান্সফার করিয়ে দেব৷ হেঁটে হেঁটে থানায় যা, দেকচিস্ না পুজোর দিনে মাল খাচ্চি?' অতঃপর সবকটাকে থানায় নিয়ে যাওন, একটাকে ননবেইলেবেল কেস দেওন, আর বাকিগুলোকে পাড়ায় এনে সিনিয়রদের সে কী মার!

এ দিকে এখনও অনেক চাঁদা বাকি৷ পাড়ায় যারা সম্বত্‍সর তেমন ইম্পর্টান্স পায় টায় না, তারা রাস্তার ধারে আপিস ঘর বানিয়ে চেয়ার টেবিল পেতে বসে পড়েছে- 'আসলে আমরাই উদ্যোক্তা, ওরা কেউ নয়' হাবভাব৷ অনেকে এর মধ্যেই নবাগত ভাড়াটেদের ডেকে 'কলের মিস্তিরি চাই আপনার'...'ইলেকট্রিক বিল জমা দিতে হবে, আমার অফিস ও দিকেই'...'কোনও ব্যাপার না বউদি, কাল ফাস্টাওয়ারে আমি আপনার রান্নার গ্যাস পৌঁছে দিয়ে তার পর আপনার ছেলেকে স্কুল থেকে নিয়ে আসব' ইত্যাদি বলছেন৷ এমনিতে ক্যারামবোর্ডের আলোর তলায় রোজ একবার করে জ্বলে ওঠা ছাড়া দেখা পাওয়া ভার, এসময়ে সারাদিন চাঁদা তুলে জনসংযোগ বাড়াচ্ছেন, বেপাড়ার লোক আত্মীয় বাড়ি খঁুজে না পেলে এক চান্স-এ বাড়ি দেখিয়ে দিচ্ছেন ধাঁ করে৷ একটু সিনিয়র কয়েকজন ক্লাবের বারান্দায় বসে পা নাচাচ্ছেন বরাবরের মতোই- এরা অ্যাডভাইজারি কমিটি, দু'পক্ষকেই স্পেশালাইজড্ টিপস্ দেন এবং সবাই নির্ভেজাল ধ্যারালে গম্ভীর মুখে বলেন 'আমি তো আগেই বলেছিলাম'৷ বিজ্ঞাপনের কাগজ হাতে একদল কর্মকর্তা সেই ছ'মাস ধরে হাতে পায়ে ধরে কাকুতি মিনতি করেছেন একটা বিজ্ঞাপন এনে দেওয়ার জন্য৷ এরা সব সময়ই ওইরকম পা নাচাতে নাচাতে বলেছেন 'ঠিক সময়ে দিয়ে দেব৷' ষষ্ঠীর দিন সকালে 'কী হল দাদা' জিজ্ঞেস করলে ওই একই উত্তর পাওয়া যায়, 'আমি তো আগেই বলেছিলাম৷' যাই হোক, ওদিকে পাড়ার ক্যাটারারের ব্যস্ততার সীমা নেই৷ হালে তার আবার এক কম্পিটিটার জুটেছে৷ এক প্রোমোটার টাইপের ছোকরা সাইড বিজনেস করবে বলে- বাঙালি সব সময়ই তক্কেতক্কে থাকে কী ভাবে সাইড বিজনেসে নামা যায়, এর ফলে আসল ব্যবসা গোল্লায় গেলেও ক্ষতি নেই- আর এক পাখি-ব্যবসায়ীকে ভুজুংভাজুং দিয়ে দলে টেনেছে৷ পাখি-ব্যবসায়ী অরিজিনাল ভেঞ্চারের কথা মাথায় রেখেই সব পদের ফিশ মুনিয়া, চিকেন তোতা, ময়ুরী কাবাব ইত্যাদি নামকরণ করায় ঈষত্‍ গণ্ডগোল শুরু হতে গ্রিল চিকেন ইনক্লুড করে অবস্থা সামলানো হয়েছে বলে খবর৷ তবে সবখানেই ফায়েড্রাইস আর চিলিচিকেন ঢালাও, ঘাবড়ানোর কারণ নেই৷

এই সময়টায় কেশ এবং ত্বকের পরিচর্যায় মাতেন প্রায় সকলেই৷ বামপন্থায় বিশ্বাসী কিছু দৃঢ়চেতা অ্যাদ্দিন চুল না আঁচড়ে, দাড়ি না কামিয়ে, দাঁত না মেজে বিপ্লবের পথ সুগম কচ্ছিলেন, ইদানীং তারাও লুকিয়ে চুরিয়ে ফেসিয়াল করান- বলছেন ওটাই প্রগতিশীলতার লক্ষণ৷ তা বটে৷ দেবীপক্ষে রাম পানও কচ্ছেন শোনা যায় ভোদকা ছেড়ে৷ পাড়ায় এক অশীতিপর বৃদ্ধ কাঁকলাশের মতো চেহারা ঘুরিয়ে কী ভাবে কে জানে তিরিশ বছরের এক অনিন্দ্যসুন্দর মহিলাকে বিয়ে করে ফাটিয়ে দিয়েছেন৷ মহিলা ফেসিয়াল ইত্যাদিতে মাহির৷ মহালয়ার দিন দেখা গেল ওই বৃদ্ধকে ষাট বছরের যুবার মতো দেখাচ্ছে, চুলের কায়দাও ঘাড়ের কাছে ময়ূরের পেখমের মতো৷ এমনকী কয়েকটা দাঁতও দেখা গেল ফোকলা মুখগহ্বরে৷ ব্যস, আর যাবে কোথায়! সবাই ছুটল চুল কোঁকড়াতে, গালের চামড়া টান করাতে৷ গোঁজরা আরও গোঁজ হয়ে বসলেন- মহিলা কোনদিকে সেটা না জেনে তার কাছে যায় কী করে ওরা? মহা সমস্যা৷ পাড়ার ভিতরে নাকি লোকাল ডিসকাউন্টেরও ব্যবস্থা আছে- সঙ্গে বাড়ির শ্যাম্পু নিয়ে গেলে আরও ছাড়৷

একজন চিরুনি, পাউডার, ফেসক্রিম, স্নো, নেলপালিশ, মেহেন্দি সব বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে শেষ বারো টাকায় রফা করার চেষ্টা করেন এবং 'তোমার বর তো আপিসে, একটু শুয়ে নিই' বলে সোজা বেডরুমে ঢুকে ঘুমিয়ে নেন সন্ধে অবধি, তার পর থেকে দ্বিপ্রাহরিক সার্ভিস বন্ধ করা হয়৷ তবে শোনা যাচ্ছে অনেকেই নাকি ওর চাইতেও ভালো ফেসিয়াল করে, সার্ভিস চার্জও কম আবার গেলে নাকি চা আর নানা রকমের খাবার বানিয়ে খাওয়ায়৷ ক্লাবে সকালের আড্ডায় সে নিয়ে চাপা টেনশন, দল পাল্টানোর মরশুমে যেমনটা হত তেমনই আবহাওয়া, কৃশানু বিকাশকে কারা পাবে সে নিয়ে চোরা অন্তর্ঘাত৷ গোঁজদের একজনের নাকি নিজস্ব হেয়ার ড্রায়ার আছে- একজন 'ওই তো ওর মামাশ্বশুর দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে সস্তায় এনে দিয়েছে' বলার ধরা পড়ে গেলেন যে উনি উল্টোদিকের৷ পরিবেশ থমথমে, সবাই সব কথার উল্টোপাল্টা উত্তর দিচ্ছে৷

ঠাকুর দেখতে যাওয়া হবে রোজ৷ তৃতীয়া থেকে শুরু৷ 'আমরা বর্ধমান যাচ্ছি' বলে একজন কথা শুরু করা মাত্র আর একজন 'আমরা সুইত্‍জারল্যান্ডে বুডঢিস্ট মতে দেবীর অরাধনা দেখতে যাচ্ছি, ওই পথ দিয়েই হনুমানরা এদেশে প্রথম আসে' বলে গোটা ক্লাবের বারান্দায় শ্মশানের স্তব্ধ সন্ধ্যায় শিরশিরে ঠান্ডা হাওয়া বইয়ে দিলেন একপ্রস্থ৷ বর্ধমান পার্টির বাড়িতে সকাল বিকেল ঝামেলা- 'কী করলে অ্যাদ্দিন চাকরি করে! ওরা ইউরোপ যাচ্ছে, আবার শুনলাম নাকি নতুন বিএমডাব্লিউ-ও কিনেছে, তুমি তো কিসুই পারো না৷' বেচারা গোঁজ রিজার্ভেশন পায়নি, ওরা 'দেশের এই ক্রাইসিসে আমাদের সকলের কর্তব্য' ইত্যাদি বলতে গিয়েছিল, কিন্ত্ত জানাজানি হয়ে যাওয়ায় এবং টানা সবাই 'আহারে, একটা টিকিটও পেলি না' বলায় আরও গোঁজ মেরে গিয়েছে৷ যাই হোক এই সব নিয়েই বাঙালির পুজো, অবশ্য এতদসত্ত্বেও মজা হবে জোর, ফুর্তির সীমা থাকবে না৷ মাঠে যারা বেলুন, চা, ঘুগনি, বুড়ির চুল, বাঁশি বেচবেন তারাও এসে বলে কয়ে গিয়েছেন৷ পুরনো ঢাকি চিঠি দিয়েছেন তিনি আসবেন, তবে এ বারের ধুতিটা যেন একটু ভালো কোয়ালিটির হয়, অন্তত একটা বছর না চললে ভালো দেখায় না- যারা দেন, তারা সব বড়োমানুষ কি না, তাই৷

No comments:

Related Posts Plugin for WordPress, Blogger...